ঢাকা, শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬ মাঘ ১৪৩১

সাবসিডিয়ারিতে ডুবেছে বারাকা পতেঙ্গা

২০২৩ ডিসেম্বর ২০ ১০:৪৫:৫২
সাবসিডিয়ারিতে ডুবেছে বারাকা পতেঙ্গা

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার ৮ মাসেরও কম সময়ের ব্যবধানে ইস্যু মূল্যের নিচে নেমে আসা বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ারের ২০২২-২৩ অর্থবছরের ব্যবসায় লোকসান হয়েছে। যার পেছনে কারন হিসেবে রয়েছে দুই সাবসিডিয়ারি কোম্পানির বড় পতন। যে কোম্পানিগুলো (সাবসিডিয়ারিসহ ৩টি) আগের অর্থবছরের ন্যায় ২০২২-২৩ অর্থবছরের আর্থিক হিসাবেও শ্রম আইন অনুযায়ি ওয়ার্কার্স প্রফিট পার্টিসিপেশন ফান্ড (ডব্লিউপিপিএফ) গঠন করেনি।

কিন্তু ২০০৬ সালের শ্রম আইনের ২৩২ ধারা অনুযায়ি, প্রতি বছর নিট মুনাফার ৫% ওয়ার্কার্স প্রফিট পার্টিসিপেশন ফান্ড (ডব্লিউপিপিএফ) গঠন করা এবং তা কর্মীদের মধ্যে বিতরন করা বাধ্যতামূলক। কিন্তু বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার কর্তৃপক্ষ ২০২২-২৩ অর্থবছরের ব্যবসায় এই ফান্ড গঠন করেনি। তবে বাংলাদেশ ইন্ডিপেন্ডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসার এসোসিয়েশেন (বিআইপিপিএ) ওই ফান্ড গঠনের বাধ্যবাধকতা থেকে অব্যাহতি চেয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছে। যা মঞ্জুর না হতেই কোম্পানি কর্তৃপক্ষ কার্যকর করা শুরু করে দিয়েছে।

সাবসিডিয়ারি কর্ণফুলি পাওয়ার : এ কোম্পানিটির ২০২২-২৩ অর্থবছরে এইচএফও, খুচরা যন্ত্রাংশ ও অন্যান্য জিনিস সংগ্রহে বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়জনিত ১১৩ কোটি ৫৭ লাখ টাকা লোকসান হয়েছে। যে কোম্পানিটির রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধে সৃষ্ট বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দায় বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতার ৪৭ শতাংশ ব্যবহৃত হয়েছে। ফলে কোম্পানিটি স্বাভাবিক মুনাফা অর্জন করতে পারেনি।

সাবসিডিয়ারি শিকলবাহা পাওয়ার : এ কোম্পানিটিরও ২০২২-২৩ অর্থবছরে এইচএফও, খুচরা যন্ত্রাংশ ও অন্যান্য জিনিস সংগ্রহে বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়জনিত বড় লোকসান হয়েছে। যার পরিমাণ ১৩৬ কোটি ৩২ লাখ টাকা। এ কোম্পানিটির রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধে সৃষ্ট বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দায় বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতার ৫০.০৪ শতাংশ ব্যবহৃত হয়েছে। ফলে কোম্পানিটি স্বাভাবিক মুনাফা অর্জন করতে পারেনি।

আরও পড়ুন......বন্ধ হয়ে যেতে পারে স্ট্যান্ডার্ড সিরামিক

২০২১ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ারের পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ ১৭৩ কোটি টাকা। এরমধ্যে শেয়ারবাজারের বিভিন্ন শ্রেণীর (উদ্যোক্তা/পরিচালক ব্যতিত) বিনিয়োগকারীদদের মালিকানা ৬১.৮৫ শতাংশ। কোম্পানিটির মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) শেয়ার দর দাঁড়িয়েছে ২৯.৩০ টাকায়। যা কোম্পানিটির ফ্লোর প্রাইস। যে দরেও কোন ক্রেতা নেই।

অথচ কোম্পানিটির কাট-অফ প্রাইস ৩২ টাকা। যে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন শুরু হওয়ার ৮ মাসেরও কম সময়ের ব্যবধানে ওই প্রাইসের নিচে নেমে আসে। সর্বপ্রথম গত বছরের ৬ মার্চ শেয়ারটি কাট-অফ প্রাইসের নিচে নামে। যে শেয়ারটি শেষ কয়েক মাস ধরে ফ্লোর প্রাইস ২৯.৩০ টাকায় আটকে আছে।

তারপরেও বিনিয়োগকারীদের চাহিদা কম থাকা এমন কোম্পানিটির উদ্যোক্তা/পরিচালকেরা ৩২ টাকার কাট-অফ প্রাইসে খুশি হতে পারেননি। বিএসইসির বুক বিল্ডিংয়ে কাট-অফ প্রাইস নির্ধারনে নতুন কড়াকড়ি আরোপের কারনে ৩২ টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল কোম্পানিটির কাট-অফ প্রাইস। অন্যথায় যোগ্য নামের অযোগ্যরা কারসাজির মাধ্যমে প্রাইস কোথায় নিয়ে যেত, তা অকল্পনীয়। যা তারা বিগত অনেক কোম্পানিতে করে দেখিয়েছে।

বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ারের জন্য গড় ৩০.৫০ টাকা করে প্রতিটি শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে ২২৫ কোটি টাকা শেয়ারবাজার থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। সাধারন বিনিয়োগকারীদের কাছে ২৯ টাকা করে ইস্যুর কারনে গড় প্রাইস ৩০.৫০ টাকায় নেমে আসে। এই ইস্যু মূল্যের কোম্পানিটি থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছরে শেয়ারহোল্ডারদের শেয়ারপ্রতি প্রাপ্তি ৫০ পয়সা। অর্থাৎ ৩০.৫০ টাকা বিনিয়োগের বিপরীতে প্রাপ্তি ৫০ পয়সা বা ১.৬৪ শতাংশ। যার চেয়ে ঝুঁকিমুক্ত ব্যাংকে এফডিআরে আরও বেশি পাওয়া যায়।

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে