ঢাকা, সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ৮ বৈশাখ ১৪৩২

ফ্লোর প্রাইসের কারনে লোকসানে ব্রোকারেজ হাউজ

২০২৪ জানুয়ারি ১৮ ১৭:১৫:৫০
ফ্লোর প্রাইসের কারনে লোকসানে ব্রোকারেজ হাউজ

ফ্লোর প্রাইস (সর্বনিম্ন দাম) বেঁধে দেয়ায় গত দেড় বছরে দেশের শেয়ারবাজারে লেনদেন ব্যাপক হারে কমে গেছে। এতে প্রায় ৮০ শতাংশ ব্রোকারেজ হাউজ তাদের পরিচালন ব্যয় তুলতে পারছে না। ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ) আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এমন তথ্য দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

পুঁজিবাজার সাংবাদিকের সংগঠন ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরামের (সিএমজেএফ)-এর সঙ্গে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে ডিবিএ। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) কার্যালয়ে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

ডিবিএ সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, বিগত দেড় বছরে আমরা সবাই ক্ষতিগ্রস্থ। এখানে কোনো লেনদেন করা যাচ্ছে না, প্রায় ২০ মাস হতে চললো। ব্রোকারেজ হাউস ২৫০ এবং আরও ৭০টির মতো ট্রেকহোল্ডার আছে। সব মিলিয়ে ৩২০টির মতো কোম্পানি এখানে রান করছে। ৮০ শতাংশের মতো কোম্পানি তার অপারেটিং কস্ট (পরিচালন ব্যয়) তুলতে পারেছে না, আজকে প্রায় দেড় বছর। মার্কেটকে মার্কেটের মতো চলতে দিতে হবে।

আরও পড়ুন.....

সাড়ে ৩ বছরেই ভেঙ্গে পড়েছে শিবলী কমিশনের আইপিওর কোম্পানিগুলো

তিনি বলেন, আমাদের ডিমিউচুয়ালাইজেশন (স্টক এক্সচেঞ্জ মালিকা থেকে ব্যবস্থাপনা পৃথক্করণ) হয়েছে ২০১৩ সালে। ডিমিউচুয়ালাইজেশনের কারণে আমাদের ক্ষতি হয়েছে, তারপরও আমরা মেনে নিয়েছি। ২০১৩ সাল থেকে ১০ বছর হয়ে গেছে। এই ১০ বছর পর আমরা যেটা বিশ্বাস করি, এটা (ডিমিউচুয়ালাইজেশন) এখন রিভিউ করার সময় এসেছে। যে আইনটা হয়েছে সেটা কতোটা বাস্তব সম্মত ছিলো, কতোটা মার্কেট ফ্রেডলি, কতোটা মার্কেট ডেভলপমেন্ট করেছে।

তিনি আরও বলেন, ২০১০ সাল থেকে গত ১৫ বছরে অর্থনীতির যে উন্নতি হয়েছে, জিডিপির সাইজ বলেন, মাইক্রো ইকোনমিকস বলেন, অবকাঠাম খাতের কথা বলেন কোনোটার সুবিধা আমরা এই স্টক মার্কেটে পায়নি। বাংলাদেশের সামগ্রীক উন্নতির সঙ্গে যদি তুলনা করি পুরো ইকোনমি এগিয়ে যাচ্ছে একভাবে, আর আমরা অন্যভাবে যাচ্ছি।

এ সময় ডিবিএ সভাপতি প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) নিয়েও সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে যে আইপিও এসেছে আমি মনে করি তা রিভিউ করার সময় এসেছে। রিভিউ যদি না করা হয়, সমস্যা চিহ্নিত হবে না। আর সমস্যা চিহ্নিত না হলে আমরা এগিয়ে যেতে পারবো না।

ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ড. এটিএম তারিকুজ্জামান বলেন, শেয়ারবাজারের আইন-কানুনগুলো মার্কেট ফ্রেন্ডলি হতে হবে।

বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি এবং আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী ও মহাব্যবস্থাপক মাজেদা খাতুন বলেন, আমি বিএমবিএ’র নতুন সভাপতি হয়েছি। আশাকরি নতুন বছরে আর্থিক খাতে ভালো হবে।

ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, আমরা চাচ্ছি একটা ভালো শেয়ার মার্কেট। শেয়ার মার্কেট ভালো হলে শিল্পায়নের সহযোগি হবে। মানুষের কর্মসংস্থান বাড়বে। পুঁজিবাজারে মানুষের অংশগ্রহণ বাড়বে। আমাদের প্রতিবেশি দেশ ভারতে আমরা দেখতে পরি ব্যাপক মানুষ শেয়ারবাজারে। আমরা চাই আমাদের শেয়ারবাজারেও ব্যাপক মানুষের অংশগ্রহণ হোক।

ডিএসইর সাবেক পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন বলেন, ব্রোকারেজ হাউজগুলোর ৬০-৭০ শতাংশ কর্মী চলে গেছে। বড় হাউজগুলো কোনো রকমে টিকে আছে। ছোট হাউজগুলোর অবস্থা খুবই খারাপ। আমাদের তিনটি হাউস সমস্যায় পড়ে যাওয়ার তথ্য আপনারা পেয়েছেন। আমাদের সহযোগীতা করেন আমরা আপনাদের একটি ভালো বাজার উপহার দিতে পারবো।

বিএমবিএ’র সাবেক সভাপতি ছায়েদুর রহমান পুঁজিবাজারে ভালো কোম্পানির আইপিও না আসার পিছনের কারণ হিসেবে ব্যাংক ঋণের সহজলভ্যতার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, একটা কোম্পানি পুঁজিবাজারে আসতে চাইলে তার আর্থিক প্রতিবেদন তৈরি করতে ২ বছর সময় লেগে যায়। বিপরীতে ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে সর্বোচ্চ ২ মাস সময় লাগে।

ডিবিএ’র সাবেক সভাপতি বলেন, আমাদের যে তিনটি ব্রোকারেজ হাউজের কথা বলা হয়েছে, এই তিনটি হাউজের এই অবস্থার জন্য বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এবং ডিএসই’র দায় আছে। আমরা দেখতে পেরেছি শুরুতে হাউজগুলোর সমস্যা কিছু খুবই কম। ধিরে ধিরে সমস্যা বড় হয়েছে। অসহযোগিতার কারণে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে।

তিনি বলেন, ফ্লোর প্রাইসের মতো জঘন্ন ঘটনা আবার বিপদে ফেলেছে। স্বল্প সময়ের জন্য এটা মেনে নেয়া যায়, কিন্তু এতো দীর্ঘ সময়ের জন্য এটা গ্রহণযোগ্য না

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে