ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬ মাঘ ১৪৩১

৩৯ টাকা ইস্যু প্রাইস : লভ্যাংশ ১.১০ টাকা

রাইট ইস্যু করতে চাওয়ার আগে বেড়ে গেল মুনাফা

২০২৩ আগস্ট ২২ ১১:০০:৩০
রাইট ইস্যু করতে চাওয়ার আগে বেড়ে গেল মুনাফা

দেশের শেয়ারবাজারে এখনো প্রিমিয়াম নেওয়া ও শুধুমাত্র অভিহিত মূল্যে শেয়ার ইস্যু করা সব কোম্পানিকে সমানভাবে মূল্যায়ন করা হয়। সবারই দৃষ্টি থাকে শেয়ার দর অভিহিত মূল্যের উপরে নাকি নিচে এবং লভ্যাংশ ১০ শতাংশ বা তার বেশি দিয়ে ‘এ’ ক্যাটাগরিতে আছে কিনা। উচ্চ প্রিমিয়াম নেওয়া কোম্পানির দর কাট-অফ প্রাইসের নিচে আসলে যেমন সমস্যা হয় না, একইভাবে শুধুমাত্র অভিহিত মূল্যে তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানির ন্যায় ১০ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়ে ‘এ’ ক্যাটাগরিতে থাকলেও সমস্যা হয় না। যে কারনেই অভিহিত মূল্যে আসা কোম্পানির গড় শেয়ার দর ও লভ্যাংশ যে প্রিমিয়াম নেওয়া কোম্পানির থেকে বেশি, সেটা বেশিরভাগ বিনিয়োগকারী জানেই না।

তেমনই একটি প্রিমিয়াম নেওয়া কোম্পানি আমরা নেটওয়ার্কস। বিশ্ব যখন তথ্য প্রযুক্তিতে (আইটি) প্রতিনিয়ত এগিয়ে যাচ্ছে, সেখানে বাংলাদশের শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত একই খাতের আমরা নেটওয়ার্ক কোম্পানি পিছিয়ে পড়ছে। অথচ শেয়ারবাজারে আসার আগে ভালো ব্যবসা দেখিয়ে উচ্চ প্রিমিয়ামে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে। যা দিয়ে ব্যবসা আরও বড় করা হবে বলে জানিয়েছিল। কিন্তু সেই কোম্পানির মুনাফা তালিকাভুক্তির পরে নিয়মিতভাবে কমে। তবে রাইট শেয়ার ইস্যু করতে চাওয়াকে কেন্দ্র করে ২০২২-২৩ অর্থবছরে দ্বিগুণ হয়ে গেছে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

আরও পড়ুন....

শেয়ারবাজারে আসার আগে ২৭ লাখ টাকার কোম্পানি হয়ে গেল ৩৮ কোটি

২০১৭ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া আমরা নেটওয়ার্কস বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে যোগ্য বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে প্রতিটি শেয়ার ৩৯ টাকা করে ও সাধারন বিনিয়োগকারীদের কাছে ৩৫ টাকা করে ইস্যুর মাধ্যমে ৫৬ কোটি ২৫ লাখ টাকা সংগ্রহ করেছিল। কোম্পানিটির সেসময় আইপিওতে আসার আগে ২০১৫-১৬ অর্থবছরের ৯ মাসে ইপিএস হয়েছিল ২.৬২ টাকা। সেই কোম্পানিটির ইপিএস পুরো ২০২১-২২ অর্থবছরে ২ টাকার নিচে নেমে আসে। তবে রাইট শেয়ার ইস্যু করতে চাওয়াকে কেন্দ্র করে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৩.৬৪ টাকায় উঠে গেছে।

কোম্পানিটির ২০১৮-১৯ অর্থবছর থেকে মুনাফা টানা পতনের মধ্যে রয়েছে। ওই অর্থবছরে আগের অর্থবছরের ৪.০১ টাকার ইপিএস কমে ৪ টাকায় নামে। যা ২০১৯-২০ অর্থবছরে আরও কমে ৩.১৯ টাকায় ও ২০২০-২১ অর্থবছরে ২.১৪ টাকায় ও ২০২১-২২ অর্থবছরে আরও পতনের মাধ্যমে ২ টাকার নিচে অর্থাৎ ১.৮৫ টাকায় নেমে আসে। তবে কোম্পানিটির পর্ষদ এখন রাইট শেয়ার ইস্যু করতে চায়। যে কারনে বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ইপিএস বাড়িয়ে ৩.৬৪ টাকা দেখিয়েছে।

অথচ ব্যবসায় বাড়ানোর কথা বলে শেয়ারবাজার থেকে ২০১৭ সালে ৫৬ কোটি টাকার বেশি সংগ্রহ করেছে। এই টাকার মধ্য থেকে ১৮ কোটি ৫৯ লাখ টাকার ঋণ পরিশোধ ও বাকি টাকা দিয়ে আইটি খাতের বিভিন্ন উন্নয়নে ব্যবহারের কথা বলা হয়েছিল।

এমন উচ্চ প্রিমিয়ামে টাকা উত্তোলন করা আমরা নেটওয়ার্কসের লভ্যাংশ আটকে আছে ১০ শতাংশ বা শেয়ারপ্রতি ১ টাকায়। গত ৭ বছরের মধ্যে ৫ বছরই ১০ শতাংশ করে লভ্যাংশ দিয়েছে। যা কাট-অফ প্রাইসের তুলনায় ২.৫৬ শতাংশ। ব্যাংকের এফডিআর করলে এর চেয়ে অনেক বেশি পাওয়া যায়।

আমরা নেটওয়ার্কসের ২০২২-২৩ অর্থবছরে শেয়ারপ্রতি ৩.৬৪ টাকা করে মোট ২২ কোটি ৫৬ লাখ টাকার নিট মুনাফা হয়েছে। এরমধ্য থেকে ১১% হারে শেয়ারপ্রতি ১.১০ টাকা করে ৬ কোটি ৮২ লাখ টাকার নগদ বা মুনাফার ৩০ শতাংশ লভ্যাংশ হিসাবে শেয়ারহোল্ডারদের মাঝে বিতরন করা হবে। মুনাফার বাকি ১৫ কোটি ৭৪ লাখ টাকা বা ৭০ শতাংশ কোম্পানির রিজার্ভে রেখে দেওয়া হবে। এভাবে কোম্পানির পর্ষদ প্রতিবছর মুনাফার বড় অংশ রিজার্ভে রেখে দিয়েছে।

সেই কোম্পানির পর্ষদ এখন ২টি সাধারন শেয়ারের বিপরীতে ১টি রাইট শেয়ার ইস্যুর চিন্তা করছে। এক্ষেত্রে তারা প্রতিটি রাইট শেয়ার ২০ টাকা প্রিমিয়ামসহ ৩০ টাকা করে বিক্রি করতে চায়।

আমরা নেটওয়ার্কসকে শেয়ারবাজারে আনার ক্ষেত্রে ইস্যু ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করে লংকাবাংলা ইনভেস্টমেন্টস। আর নিরীক্ষক হিসেবে ছিল কে.এম হাসান অ্যান্ড কোং।

উল্লেখ্য ২০১৭ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া আমরা নেটওয়ার্কসের বর্তমানে ৬১ কোটি ৯৯ লাখ টাকা পরিশোধিত মূলধন রয়েছে। সোমবার (২১ আগস্ট) লেনদেন শেষে কোম্পানিটির শেয়ার দর দাঁড়িয়েছে ৬৩.৫০ টাকায়।

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে