ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ণ ৩ প্রতিষ্ঠানে সুযোগ সন্ধানী বুলবুল

২০২৪ আগস্ট ১৯ ১০:২৪:১৯
শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ণ ৩ প্রতিষ্ঠানে সুযোগ সন্ধানী বুলবুল

অর্থ বাণিজ্য প্রতিবেদক : শেয়ারবাজারে কয়েক বছর ধরে আলোচনায় দূবৃর্ত্তায়ন আওয়ামীলীগের নেতা একেএম নুরুল ফজল বুলবুল। যে ধীরে ধীরে শেয়ারবাজারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান গ্রাস করার পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছিলো। যার ধারাবাহিকতায় তিনি কোন বিনিয়োগ ছাড়াই ৩টি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের পর্ষদে ঢুকে পড়েছেন। যিনি কোন অবদান ছাড়াই ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিল করে আসছিলেন প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে। তবে স্বৈরাচারী আওয়ামী সরকারের পতনে তারও হয়তো এ পথা চলা সমাপ্তি ঘটবে।

নুরুল ফজল বুলবুল বর্তমানে শেয়ারবাজারের অতীব গুরুত্বপূর্ণ এবং সবচেয়ে স্পর্শকাতর প্রতিষ্ঠান সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিডিবিএল) এর পর্ষদে ১৩ বছর ধরে। এছাড়া ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড (সিএমএসএফ) ও সেন্ট্রাল কাউন্টারপার্টি বাংলাদেশ লিমিটেডে (সিসিবিএল) ঢুকে পড়েছেন।

বুলবুল শুরুতে এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম মজুমদারের সঙ্গে সখ্যতা, আওয়ামীলীগ নেতা ও লবিং করে জায়গা করে নেন সিডিবিএলে। বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) প্রতিনিধি পরিচালক হিসেবে সিডিবিএলে ঢুকেন। এরপরে সিডিবিএলের প্রতিনিধি হিসেবে সিএমএসএফ ও সিসিবিএলে ঢুকেছেন।

ডিএসইর এক সিনিয়র ট্রেকহোল্ডার অর্থ বাণিজ্যকে বলেন, বুলবুল শেয়ারবাজারে ধীরে ধীরে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠছিলেন। এরইমধ্যে তার নামে অনেক অনিয়ম ও আধিপত্য বিস্তারের কথা বেরিয়েছে। যেটা সম্ভব হয়েছে স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ করার কারনে। কেউই তার শেয়ারবাজারে আধিপত্য বিস্তারকে প্রতিরোধ করতে পারছিল না। তবে এখন সময় এসেছে। গত ১ দশকে সিডিবিএলে কি অনিয়ম করেছে, তা খুঁজে শাস্তির আওতায় আনা হবে। একইসঙ্গে সিসিবিএল ও সিএমএসএফে কোন অনিয়ম করেছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হবে।

আরও পড়ুন....

এখনো পদত্যাগ করেনি তল্পিবাহক পরিচালকেরা

বুলবুল ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে শেয়ার সংরক্ষণকারী সিডিবিএলে দীর্ঘদিন ধরে একটি চক্র গড়ে তুলেছেন। যারা সার্ভার থেকে তথ্য পাচারসহ বিভিন্ন অনিয়মে জড়িত বলে অভিযোগ আছে।

এই বুলবুল ফজল ২০০১ সালে আওয়ামীলীগের জাতীয় নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণার কমিটির দায়িত্বে ছিলেন। ওই নির্বাচনে আওয়ামীলীগের বড় পরাজয় হয়। পরবর্তীতে আওয়ামীলীগের তদন্তে বুলবুলের বিরুদ্ধে প্রচার-প্রচারনার নামে তহবিল তসরুপের প্রমাণ মেলে। যে কারনে ওইসময় তাকে আওয়ামীলীগ থেকে বহিস্কার করা হয়।

ডিএসইর আরেক সিনিয়র ট্রেকহোল্ডার অর্থ বাণিজ্যকে বলেন, বুলবুলের শেয়ারবাজারে কোন অবদান নাই। অথচ সে এই বাজারের ৩টি প্রতিষ্ঠানের পর্ষদে। যে প্রতিষ্ঠানগুলো শত শত কোটি টাকার মালিক। ওইসব অর্থ লোপাটের জন্যই তারমতো একজন লোককে পর্ষদে বসানো হয়েছে। যিনি কোন কারন ছাড়াই ওইসব প্রতিষ্ঠানের অর্থে নিয়মিত বিদেশ ভ্রমন করেন।

বর্তমানে সিডিবিএলের পরিচালনা পর্ষদে ১৩ জন সদস্য রয়েছেন। চেয়ারম্যান হিসাবে রয়েছেন বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শেখ কবির হোসেন। কিন্তু তিনি শারীরিকভাবে কিছুটা অসুস্থ থাকায় ভাইস চেয়ারম্যান, ব্যাংক মালিকদের সংগঠন বিএবির প্রতিনিধি নুরুল ফজল বুলবুল সক্রিয়ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন। ২০১১ সাল থেকে সিডিবিএলের পর্ষদে রয়েছেন তিনি। ভাইস চেয়ারম্যান হিসাবে আছেন ২০১৬ সাল থেকে।

দেশের শেয়ারবাজারের আধুনিকায়নে সিডিবিএলের জন্ম। দুই স্টক এক্সচেঞ্জে প্রতিদিন যত শেয়ার লেনদেন হয়, প্রতিষ্ঠানটি তা সংরক্ষণ করে রাখে। এ ছাড়াও শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের যে কোনো তথ্য সিডিবিএলে সংরক্ষিত। এমন একটি প্রতিষ্ঠানে সুবিধাবাদী বুলবুল ১ যুগের বেশি সময় পরিচালকের চেয়ার আঁকড়ে ধরে রেখেছেন। যে প্রতিষ্ঠানটির বোর্ড মিটিংয়ে অংশ নিলে একজন সদস্যকে ৩০ হাজার টাকা সম্মানি দেওয়া হয়।

এসব বিষয়ে জানতে একেএম নুরুল ফজল বুলবুলের হোয়াটসঅ্যাপে লিখিত দিয়েও রিপোর্ট প্রকাশের সময়কালীন পর্যন্ত তার কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে