ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১

বিএসইসিতে লুৎফুল কবিরদের মতো অনেক দূর্নীতিপরায়ণ কর্মকর্তা : তাদেরকে রেখে স্বচ্ছতা কিভাবে সম্ভব?

২০২৪ আগস্ট ২২ ১০:২৮:১৯
বিএসইসিতে লুৎফুল কবিরদের মতো অনেক দূর্নীতিপরায়ণ কর্মকর্তা : তাদেরকে রেখে স্বচ্ছতা কিভাবে সম্ভব?

অর্থ বাণিজ্য প্রতিবেদক : শেয়ারবাজারে সবচেয়ে আস্থার জায়গা হওয়া দরকার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ‍্যান্ড কমিশন (বিএসইসি)। কিন্তু এ প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এতোটাই দূর্নীতিতে ওতোপ্রোতভাবে জড়িত, যাতে করে আস্থাতো নেই, বরং অনাস্থা তৈরী হয়েছে। যে কমিশনে উর্ধ্বতনদের ছত্রছায়ায় অনেকের মধ্যে বিএসইসির অতিরিক্ত পরিচালক এসকে মোঃ লুৎফুল কবির আতঙ্কের নাম। এদের মতো কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দায়িত্বে রেখে শেয়ারবাজারে আস্থা ফেরানো নতুন চেয়ারম্যানের পক্ষে কঠিন হবে বলে বাজার সংশ্লিষ্টদের ধারনা। উল্টো ওইসব অসৎ কর্মকর্তারা বিএসইসির নতুন চেয়ারম্যান ও সৎ ব্যক্তি রাশেদ মাকসুদকে কতদিন টিকতে দেবে, সেটাও প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।

শেয়ারবাজার বিশ্লেষক ও অর্থনীতিবীদ আবু আহমেদ ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরামের এক অনুষ্ঠানে বুধবার (২১ আগস্ট) বলেন, ১৯৯৩ সালে তিনি বিএসইসি গঠনের জন্য আওয়াজ তোলেন। তবে এ নিয়ে ওইসময় ডিএসইর প্রয়াত এক সভাপতি তাকে বলেছিলেন, এখন যে এতো বিএসইসি গঠনের জন্য দাবি জানাচ্ছেন, একসময় দেখবেন এটা দানব হয়ে দাঁড়াবে। তার সে কথার যথার্থ প্রমাণ এখন পাচ্ছি। নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি নানা অনিয়ম ও দূর্ণীতির জন্ম দিয়েছে। যেখানে অনেক দূর্নীতিপরায়ণ কর্মকর্তা তৈরী হয়েছে।

এসকে মোঃ লুৎফুল কবির দীর্ঘদিন ধরে ক্যাপিটাল মার্কেট রেগুলেটরি রিফর্মস অ্যান্ড কমপ্লায়েন্স বিভাগে থেকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিকে অন্যায়ভাবে সুযোগ দিয়ে অনৈতিক সুবিধা নিয়েছেন। যিনি বেক্সিমকোর আলোচিত ৩ হাজার কোটি টাকার সুকুক বন্ড ও সোনালি পেপারের রাইট ইস্যুতে আইন পরিবর্তন করে অন্যায়ভাবে ওই ২ কোম্পানিকে সুযোগ করে দিয়েছেন। এছাড়া দূর্বল কোম্পানির পর্ষদ ভেঙ্গে দখল নেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন। এমনকি আইন পরিবর্তন হওয়ার আগে ও পরে বেনামে শেয়ার কিনে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা।

লুৎফুল কবিরের মতো আরও অনেক অসৎ কর্মকর্তা রয়েছে বিএসইসিতে। এ পরিস্থিতিতে অবিলম্বে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি থেকে সকল দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তাকে অপসারণ করতে হবে বলে সম্প্রতী এক সংবাদ সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান ডিবিএর সভাপতি সাইফুল ইসলাম।

অর্থ বাণিজ্যর কাছে বিএসইসির কিছু কর্মকর্তার অনিয়ম ও দূর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা কামানোর তথ্য এসেছে। যেখানে ক্যাপিটাল রেইজিং বিভাগের সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তারা কিভাবে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে (আইপিও) আসা কোম্পানিগুলো থেকে বেনামে টাকা ছাড়াই শেয়ার নিয়েছেন, তা তুলে ধরা হবে। এছাড়া অন্যসব বিভাগের যেসব কর্মকর্তারা কোম্পানি দখল ও ওটিসির কোম্পানিকে মূল মার্কেটে আনতে সহযোগিতার মাধ্যমে অবৈধ আয় করেছেন, ভয়ভীতি দেখিয়ে এবং অন্যায় আড়াল করতে যে টাকা কামিয়েছেন এবং ইস্যু্য়ার কোম্পানি অ্যাফেয়ার্স বিভাগের দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের নিয়েও বিস্তারিত তুলে ধরা হবে।

এইসব অসৎ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে এক সংবাদ সম্মলেনে ডিবিএর সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, বিএসইসিতে কমিশনারদের মতো অনেক অসৎ কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছে। এই কমিশনে কমিশনারদের মতো কর্মকর্তা- কর্মচারীদেরকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। এজন‍্য পুরো কমিশন পূণঃগঠন করতে হবে।

তিনি বলেন, বিগত দুটি কমিশন গত ১৩-১৪ বছরে আমাদের অনেক দিনের গড়া সুশৃংখল সম্ভাবনাময় বাজারকে ওলট পালট করে দিয়েছে। এইসব অপশাসন ও অপকর্মে তার সাথে কমিশনের বহু অসৎ, দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তা জড়িত রয়েছে। যারা পদ ও পদবীর লোভে, নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতে বিগত কমিশনের সাথে জোট বেঁধে নানা অনিয়ম ও অপকর্ম চালিয়ে বাজারের ব্যবসায়ীদের সর্বশান্ত করেছে। কমিশনে প্রভাব বিস্তারকারী এ জাতীয় অসংখ্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনৈতিক অর্থ আয়ের অভিযোগ রয়েছে।

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে