ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১

এবার ডিএসইর পর্ষদ থেকে সরে দাঁড়ালেন হেলাল : রয়েছে ষড়*যন্ত্রকারী নাহিদ

২০২৪ সেপ্টেম্বর ১২ ০৯:২৫:৪৭
এবার ডিএসইর পর্ষদ থেকে সরে দাঁড়ালেন হেলাল : রয়েছে ষড়*যন্ত্রকারী নাহিদ

অর্থ বাণিজ্য প্রতিবেদক : দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পাওয়া কেএএম মাজেদুর রহমানের পরে ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন সরে দাঁড়িয়েছেন। তারা ২জন পর্ষদে যোগ দেবেন না। তবে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি)কমিশনার ড. এটিএম তারিকুজ্জামানকে নিয়ে নজিরবিহীন ষড়যন্ত্র করা আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ডক্টর নাহিদ হোসেন এখনো পদত্যাগ করেননি। যার নিয়োগও অন্য ২জনের ন্যায় আইন ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে।

বিএসইসির এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা অর্থ বাণিজ্যকে জানিয়েছে, বিতর্কের মধ্যে কেএএম মাজেদুর রহমান ও ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন পর্ষদে যোগ দেবেন না বলে জানিয়েছে।

এর আগে গত ১ সেপ্টেম্বর ডিএসইর স্বতন্ত্র বা স্বাধীন পরিচালক হিসেবে ৭জনের মধ্যে কেএএম মাজেদুর রহমান, ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ডক্টর নাহিদ হোসেনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। এক্সেত্রে আইনের ব্যত্যয় হয়েছে বলে ডিএসইর ট্রেকহোল্ডাররা প্রশ্ন তোলে।

দুই জন পদত্যাগ বা ডিএসইর পর্ষদে যোগ দিতে অনীহা প্রকাশ করলেও সবচেয়ে বড় আতঙ্ক যাকে ঘিরে, সেই নাহিদ এখনো রয়ে গেছেন। যিনি অর্থ উপদেষ্টার নাম ব্যবহার করে বিএসইসির কমিশনার তারিকুজ্জামানকে পদত্যাগ করতে বলেন। অথচ অর্থ উপদেষ্টা এর সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না এবং জানতেন না। এমন ষড়যন্ত্রের পরেও কমিশনারকে অব্যাহতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করাতে সক্ষম হয়েছেন নাহিদ।

এমন ব্যক্তিকে নিয়ে এখন আতঙ্কে ডিএসইর শেয়ারহোল্ডাররা। যে ব্যক্তি কমিশনারকে অপসারন করতে পারে, সে ডিএসইকে গিলে খেয়ে ফেলতে পারে- এমন আতঙ্ক ডিএসইর মধ্যে।

স্বৈরশাসক আওয়ামীলীগের অনেক সুযোগ-সুবিধা ভোগী নাহিদ। তারপরেও এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন এই অতিরিক্ত সচিব ড. নাহিদ হোসেন। যে কারনে কাউকে তোয়াক্কা না করার মনোভাব এখনো রয়েছে। একইসঙ্গে বজায় রয়েছে আওয়ামীলীগের ষড়যন্ত্র তত্ত্বের নীতি। এমন ব্যক্তিকে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ করা ঠিক হয়নি বলে মনে করেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। ফলে অতি দ্রুত তার নিয়োগের বাতিল দাবি করেছেন তারা।

কেএএম মাজেদুর রহমানের পরে ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিনের ন্যায় নাহিদ হোসেনের নিয়োগেও আইনের ব্যত্যয় ঘটেছে বলে ডিএসইর দাবি। তাই নাহিদের অপসারন দাবি করতে বিএসইসিকে জানায় ডিএসই কর্তৃপক্ষ।

ডিএসই রেগুলেশন, ২০১৩ এর ৫ ধারার ‘এফ’ উপধারায় বলা আছে, স্টক এক্সচেঞ্জের কোন ট্রেকহোল্ডার বা শেয়ারহোল্ডারের সঙ্গে সর্ম্পৃক্ত আছে বা ছিল, এমন কেউ ডিএসইর স্বাধীন পরিচালক হতে পারবেন না। এছাড়া ‘জি’ উপধারায় বলা হয়েছে, শেয়ারবাজার মধ্যস্থতাকারী কোন প্রতিষ্ঠানে (মার্চেন্ট ব্যাংক ও অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিসহ) সর্বশেষ ৩ বছরের মধ্যে কর্মী বা পরিচালক হিসেবে জড়িত থাকা কেউ স্বাধীন পরিচালক হতে পারবেন না। এছাড়া (জে) উপধারায় বলা হয়েছে, কোন নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানের কোন কর্মী ডিএসইর স্বাধীন পরিচালক হতে পারবেন না।

আরও পড়ুন....

ডিএসইর পর্ষদ থেকে সরে দাঁড়ালেন মাজেদুর রহমান

পরিচালক নিয়োগে জটিলতা : নির্দেশনা চেয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে বিএসইসির চিঠি

এবার হেলাল উদ্দিনকে ডিএসইর স্বাধীন পরিচালক নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক

স্বাধীন পরিচালক নিয়োগে ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন আইন পরিপালনের আহ্বান

ডিএসইতে বিএসইসির এককভাবে স্বাধীন পরিচালক চাপিয়ে দেয়া নজিরবিহীন

ডিএসইতে স্বাধীন পরিচালক নিয়োগে আইনের পরিপালন নিয়ে বিতর্ক

স্বাধীন পরিচালক নিয়োগে স্বাধীনতা নেই ডিএসইর

এমনকি ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন স্কীমের ৪.২ এর (ই) এর ৬-এ বলা হয়েছে, স্টক এক্সচেঞ্জের কোন ট্রেকহোল্ডার বা শেয়ারহোল্ডারের সঙ্গে সর্ম্পৃক্ত আছে বা ছিল, এমন কেউ ডিএসইর স্বাধীন পরিচালক হতে পারবেন না। ৭-এ বলা হয়েছে, শেয়ারবাজার মধ্যস্থতাকারী কোন প্রতিষ্ঠানে (মার্চেন্ট ব্যাংক ও অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিসহ) সর্বশেষ ৩ বছরের মধ্যে কর্মী বা পরিচালক হিসেবে জড়িত থাকা কেউ স্বাধীন পরিচালক হতে পারবেন। এছাড়া ১০-এ বলা হয়েছে, কোন নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানের কোন কর্মী ডিএসইর স্বাধীন পরিচালক হতে পারবেন না।

এমন বিধান থাকার পরেও কে এ এম মাজেদুর রহমান, ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ডক্টর নাহিদ হোসেনকে স্বাধীন পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেয় বিএসইসি। যেখানে মাজেদুর রহমান ও ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন সর্বশেষ ৩ বছরের মধ্যে শেয়ারবাজারের মধ্যস্থতাকারী ডিএসইর ট্রেকহোল্ডার প্রতিষ্ঠানে জড়িত ছিল।

এরমধ্যে মাজেদুর রহমান একে খান সিকিউরিটিজে ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পরিচালক পদে ছিলেন। আর ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন ২০১৩ সালের মে মাস থেকে ২০২২ সালের মে মাস পর্যন্ত ডিএসইর ট্রেকহোল্ডার আইসিবি সিকিউরিটিজ ট্রেডিং কোম্পানিতে পরিচালক পদে ছিলেন।

আর বিএসইসি যে মন্ত্রণালয়ের অধীনে, সেই অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে কর্মরত রয়েছেন অতিরিক্ত সচিব ডক্টর নাহিদ হোসেন। যদিও বিএসইসি একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান বলা হয়। কিন্তু দেশের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। অর্থমন্ত্রণালয় বিএসইসির যেকোন বিষয়েই হস্তক্ষেপ করতে পারে এবং অতিতে করেছে।

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে