ঢাকা, বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

সিআরও বাশারকে ধরতে পুলিশ নিয়ে ডিএসইতে বিনিয়োগকারীরা

২০২৪ নভেম্বর ১১ ১৭:৫৪:১৬
সিআরও বাশারকে ধরতে পুলিশ নিয়ে ডিএসইতে বিনিয়োগকারীরা

অর্থ বাণিজ্য প্রতিবেদক : বিতর্কিত ও সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগা খায়রুল বাশার আবু তাহের মোহাম্মদ দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা (সিআরও)। এই সিআরও এর দায়িত্ব হওয়া সত্ত্বেও মশিউর সিকিউরিটিজ সরেজমিনে যাচাই না করায় বিনিয়োগকারীরা হারিয়েছে ১৬১ কোটি টাকা। যে কারনে ব্রোকারেজ হাউজটির বিনিয়োগকারীরা তাকে আটকে পুলিশ নিয়ে ডিএসইতে যায়।

সোমবার (১১ নভেম্বর) নিকুঞ্জে ডিএসই ভবনে এ ঘটনা ঘটেছে।

এর আগে মশিউর সিকিউরিটিজে ব্যর্থতার দায়ে গত ২৩ সেপ্টেম্বর খায়রুল বাশারকে শোকজ করে খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন কমিশন।

জানা গেছে, খায়রুল বাশারের ব্যর্থতায় বিনিয়োগকারীদের ১৬১ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে মশিউর সিকিউরিটিজ। এর মধ্যে গ্রাহকের সমন্বিত হিসাবে ঘাটতি (সিসিএ) ৬৮ কোটি ৫৮ লাখ টাকা এবং শেয়ার বিক্রি করে নিয়েছে ৯২ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। দেশের শেয়ারবাজারের ইতিহাসে একক কোনো ব্রোকারেজ হাউজের এটিই সবচেয়ে বড় জালিয়াতি।

ওই ব্রোকারেজ হাউজের মাধ্যমে বিনিয়োগ করে ক্ষতিগ্রস্থ ৬-৭ জন বিনিয়োগকারী সোমবার ডিএসইতে পুলিশ সদস্যদের নিয়ে যান। তারা বাশারকে আটকের জন্য চেষ্টা করেন। তাদের দাবি, বাশারের কারনেই আজকে তাদের বিশাল ক্ষতি হয়েছে। সে যদি ঘুষ খেয়ে ব্রোকারেজ হাউজটিতে তদন্ত বন্ধ না করতো বা সঠিক তদন্ত রিপোর্ট দিত, তাহলে হাউজটির কর্মকর্তারা বিনিয়োগকারীদের টাকা মেরে দিতে পারতো না। তার এই কাজে সহযোগিতা করেছেন ডিএসইর মো. বজলুর রহমান, জাকির হোসেন, মো. ইকরাম হোসেন, আফজালুর রহমানসহ কয়েকজন দূর্ণীতিবাজ কর্মকর্তা।

তাই বিনিয়োগকারীদের ক্ষতির দায়ভার বাশারদের নিতে হবে। তাদের মতো দূর্ণীতিবাজ কর্মকর্তাদের ডিএসইতে থাকার কোন যোগ্যতা নেই। তারা যতদিন ডিএসইতে থাকবে, ততদিন বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্থ হবে।

আরও পড়ুন......

ডিএসইর কর্মী হলেও বাশার কাজ করেন বিএসইসির প্রতিনিধি হিসেবে

ডিএসইর সিআরও‘র ব্যর্থতায় মশিউর সিকিউরিটিজে ১৬১ কোটি টাকার জালিয়াতি: বিএসইসির শোকজ

বাশারসহ অন্য কর্মকর্তাদের দূর্ণীতির বিষয়ে ডিএসইতে যাওয়া বিনিয়োগকারী ও পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ করেন ডিএসইর প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) ও ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক স্বাত্তিক আহমেদ শাহ।

এ বিষয়ে ডিএসইর সিএফও অর্থ বাণিজ্যকে বলেন, মশিউর সিকিউরিটিজে ক্ষতিগ্রস্থ কিছু বিনিয়োগকারী পুলিশ নিয়ে ডিএসইতে এসেছিলেন। তারা সিআরও বাশারসহ কয়েকজনের বিষয়ে অভিযোগ করেছেন। এছাড়া কিছু প্রমাণাদি দিয়েছেন। তবে বিষয়গুলো আমার জানা নেই। এ বিষয়ে পর্ষদে আলাপ-আলোচনা করে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এরইমধ্যে ডিএসইর চেয়ারম্যানকে অবহিত করা হয়েছে। তিনি বিষয়টি পরবর্তী পর্ষদ সভায় উপস্থাপনের জন্য বলেছেন।

বিনিয়োগকারীরা পুলিশের কাছে কোন লিখিত অভিযোগ করেছেন কিনা- এমন প্রশ্নে ডিএসইর সিএফও বলেন, মনে হয় না করেছে। তবে পুলিশ হয়তো কারও অনুরোধে ডিএসইতে এসেছিলেন। তারা কিছু বলেননি।

উল্লেখ্য, ইতোমধ্যে মশিউর সিকিউরিটিজের ব্যাপারে বেশকিছু ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে বর্তমান কমিশন। এর মধ্যে আছে মশিউর সিকিউরিটিজের বিরুদ্ধে ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন, ‘ফ্রি লিমিট’সহ দেওয়া সুযোগ-সুবিধা বন্ধ করা, পরিচালকদের ব্যাংক ও বিও হিসাব স্থগিত এবং জড়িত ও তাদের পরিবারের সদস্যদের দেশ থেকে পালানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের উদ্যোগ। এছাড়া তদন্তের পর আইন অনুসারে আরও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে