ঢাকা, বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শেয়ারবাজার নিয়ে ষড়যন্ত্রকারী নাহিদকে ওএসডি : বহাল ডিএসইর পর্ষদে

২০২৪ নভেম্বর ২০ ২১:০০:২৫
শেয়ারবাজার নিয়ে ষড়যন্ত্রকারী নাহিদকে ওএসডি : বহাল ডিএসইর পর্ষদে

অর্থ বাণিজ্য প্রতিবেদক : দেশের শেয়ারবাজার নিয়ে ষড়যন্ত্রকারী আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ডক্টর নাহিদ হোসেনকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে। যে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার ড. এটিএম তারিকুজ্জামানকে নিয়ে নজিরবিহীন ষড়যন্ত্র করে পদত্যাগে বাধ্য করান। একইসঙ্গে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে নিয়ম বর্হিভূতভাবে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) স্বতন্ত্র পরিচালক হয়েছেন।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন নিয়োগ শাখা থেকে বুধবার (২০ নভেম্বর) ওএসডি সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব জামিলা শবনম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

বর্তমানে নাহিদ দেশের বাহিরে রয়েছেন। যিনি পরিবারকে অস্ট্রেলিয়ায় সময় দেওয়ার জন্য গত ২০ অক্টোবর থেকে আগামি ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত ছুটিতে রয়েছেন।

গত ১ সেপ্টেম্বর ডিএসইর স্বতন্ত্র বা স্বাধীন পরিচালক হিসেবে ৭জনের মধ্যে কেএএম মাজেদুর রহমান, ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ডক্টর নাহিদ হোসেনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। এক্সেত্রে আইনের ব্যত্যয় হয়েছে বলে ডিএসইর ট্রেকহোল্ডাররা প্রশ্ন তোলে।

তিন জনের মধ্যে দুই জন পদত্যাগ বা ডিএসইর পর্ষদে যোগ দিতে অনীহা প্রকাশ করলেও সবচেয়ে বড় আতঙ্ক যাকে ঘিরে, সেই নাহিদ এখনো রয়ে গেছেন। যিনি অর্থ উপদেষ্টার নাম ব্যবহার করে বিএসইসির কমিশনার তারিকুজ্জামানকে পদত্যাগ করতে বলেন। অথচ অর্থ উপদেষ্টা এর সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না এবং জানতেন না। এমন ষড়যন্ত্রের পরেও কমিশনারকে অব্যাহতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করাতে সক্ষম হন নাহিদ।

এমন ব্যক্তিকে নিয়ে এখন আতঙ্কে ডিএসইর শেয়ারহোল্ডাররা। যে ব্যক্তি কমিশনারকে অপসারন করতে পারে, সে ডিএসইকে গিলে খেয়ে ফেলতে পারে- এমন আতঙ্ক ডিএসইর মধ্যে।

স্বৈরশাসক আওয়ামীলীগের অনেক সুযোগ-সুবিধা ভোগী নাহিদ। তারপরেও অনেকদিন বহাল তবিয়তে ছিলেন এই অতিরিক্ত সচিব ড. নাহিদ হোসেন। যার বিরুদ্ধে অবশেষে পদক্ষেপ নিল অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। কিন্তু ডিএসইর পর্ষদে রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে ডিএসই কি ব্যবস্থা নেয়, তা এখন দেখার বিষয়।

কেএএম মাজেদুর রহমানের পরে ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিনের ন্যায় নাহিদ হোসেনের নিয়োগেও আইনের ব্যত্যয় ঘটে বলে ডিএসইর দাবি। তাই নাহিদের অপসারন দাবি করতে বিএসইসিকে জানায় ডিএসই কর্তৃপক্ষ।

ডিএসই রেগুলেশন, ২০১৩ এর ৫ ধারার ‘এফ’ উপধারায় বলা আছে, স্টক এক্সচেঞ্জের কোন ট্রেকহোল্ডার বা শেয়ারহোল্ডারের সঙ্গে সর্ম্পৃক্ত আছে বা ছিল, এমন কেউ ডিএসইর স্বাধীন পরিচালক হতে পারবেন না। এছাড়া ‘জি’ উপধারায় বলা হয়েছে, শেয়ারবাজার মধ্যস্থতাকারী কোন প্রতিষ্ঠানে (মার্চেন্ট ব্যাংক ও অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিসহ) সর্বশেষ ৩ বছরের মধ্যে কর্মী বা পরিচালক হিসেবে জড়িত থাকা কেউ স্বাধীন পরিচালক হতে পারবেন না। এছাড়া (জে) উপধারায় বলা হয়েছে, কোন নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানের কোন কর্মী ডিএসইর স্বাধীন পরিচালক হতে পারবেন না।

আরও পড়ুন....

স্বাধীন পরিচালক নিয়োগে স্বাধীনতা নেই ডিএসইর

আওয়ামীলীগের সুবিধাভোগী নাহিদের শেয়ারবাজার নিয়ে ষড়যন্ত্র

এমনকি ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন স্কীমের ৪.২ এর (ই) এর ৬-এ বলা হয়েছে, স্টক এক্সচেঞ্জের কোন ট্রেকহোল্ডার বা শেয়ারহোল্ডারের সঙ্গে সর্ম্পৃক্ত আছে বা ছিল, এমন কেউ ডিএসইর স্বাধীন পরিচালক হতে পারবেন না। ৭-এ বলা হয়েছে, শেয়ারবাজার মধ্যস্থতাকারী কোন প্রতিষ্ঠানে (মার্চেন্ট ব্যাংক ও অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিসহ) সর্বশেষ ৩ বছরের মধ্যে কর্মী বা পরিচালক হিসেবে জড়িত থাকা কেউ স্বাধীন পরিচালক হতে পারবেন। এছাড়া ১০-এ বলা হয়েছে, কোন নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানের কোন কর্মী ডিএসইর স্বাধীন পরিচালক হতে পারবেন না।

এমন বিধান থাকার পরেও বিএসইসি যে মন্ত্রণালয়ের অধীনে, সেই অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে কর্মরত অতিরিক্ত সচিব ডক্টর নাহিদ হোসেনকে ডিএসইর স্বতন্ত্র পরিচালক করে বিএসইসি। যদিও বিএসইসি একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান বলা হয়। কিন্তু দেশের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। অর্থমন্ত্রণালয় বিএসইসির যেকোন বিষয়েই হস্তক্ষেপ করতে পারে এবং অতিতে করেছে।

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে