ঢাকা, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১

১৮৪ কোটি টাকার মজুদ পণ্যের সত্যতা নেই

আমান কটনের আইপিও ফান্ড জামানত রেখে অন্য কোম্পানির ঋণ

২০২৪ ডিসেম্বর ২৩ ০৯:৩৮:০৩
আমান কটনের আইপিও ফান্ড জামানত রেখে অন্য কোম্পানির ঋণ

ব্যবসা সম্প্রসারণ ও ঋণ পরিশোধে শেয়ারবাজার থেকে ২০১৮ সালে ৮০ কোটি উত্তোলন করে আমান কটন ফাইব্রাস। অথচ এই কোম্পানিটি থেকেই সহযোগি কোম্পানিতে ঋণের নামে ২৭ কোটি ৪০ লাখ টাকা পাচাঁর করা হয়েছিল। যা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কড়াকড়িতে বর্তমানে কমে এসেছে। তবে এখনো আইপিও ফান্ডের অর্থ ব্যবহার করতে পারেনি। যে টাকা ব্যবহার করার সক্ষমতাই হারিয়ে ফেলেছে কোম্পানিটি। কারন এরইমধ্যে আইপিও ফান্ড ব্যাংক থেকে জব্দ করা হয়েছে।

২০১৮ সালে আমান কটনের জন্য বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে ৮০ কোটি টাকা সংগ্রহ করা হয়। এরমধ্যে ১০ কোটি ১৬ লাখ টাকা দিয়ে ঋণ পরিশোধ করা হবে বলে প্রসপেক্টাসে উল্লেখ করা হয়। অথচ পরিচালকদের ব্যক্তিগত স্বার্থে আমান কটন থেকে এর চেয়ে বেশি সহযোগিতে দিয়েছিল।

জানা গেছে, বিএসইসির কড়াকড়িতে এ রাস্তা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে আমান কটনের আইপিও ফান্ড জামানত রেখে গ্রুপটির অন্য প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ নেয় উদ্যোক্তা/পরিচালকেরা। তবে সেই ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে খেলাপি হয়ে গেছে। এ অবস্থায় ঋণের বিপরীতে জামানত নেওয়া আমান কটনের আইপিও ফান্ড জব্দ করেছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। যাতে এখন একপ্রকার আইপিও ফান্ড খাতায় আছে, বাস্তবে নেই।

এই কোম্পানি কর্তৃপক্ষ জমি কেনার নামে অগ্রিম হিসাবে ১২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা প্রদান করে রেখেছে বলে আর্থিক হিসাবে তথ্য দিয়েছে। এছাড়া ওই জমি মাটিভরাট করে উন্নয়নের জন্য ৯২ লাখ টাকা অগ্রিম দিয়ে রেখেছে। যা কয়েক বছর ধরে দেখিয়ে আসছে আমান কটন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু জমি কোম্পানির নামে আসছে না। এ জাতীয় টাকা কোম্পানি কর্তৃপক্ষ নিজেরা ব্যবহার করে অগ্রিম হিসাবে প্রদান দেখিয়ে থাকে।

অনেক আশার আলো দেখিয়ে শেয়ারবাজারে আসা আমান কটন কর্তৃপক্ষ আইপিও ফান্ড ব্যবহার করতে পারছে না। আইপিওর টাকা ২০১৯ সালের ৫ আগস্টের মধ্যে ব্যবহার সম্পন্ন করবে বলে প্রসপেক্টাসে উল্লেখ করেছিল। কিন্তু ২০২৩ সালের ৩০ জুনেও আইপিওর ৭১ কোটি ৭৫ লাখ টাকার ফান্ড অব্যবহৃত থাকে। যা চলতি বছরের অক্টোবরের মধ্যে ব্যবহার করবে বলে শেয়ারহোল্ডারদের থেকে সময় নিলেও তা সম্ভব করতে পারেনি।

এদিকে কোম্পানি কর্তৃপক্ষের দেখানো ১৮৪ কোটি ২০ লাখ টাকা মজুদ পণ্যের সত্যতা যাচাই করতে পারেনি নিরীক্ষক। কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সময়ের সীমাবদ্ধতার কারনে সরেজমিনে ওই মজুদ পণ্য প্রকৃত অর্থে আছে কিনা, বা কি পরিমাণ আছে, তা যাচাই করতে পারেনি নিরীক্ষক।

গ্রুপের অন্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আমান কটনের ২৬ কোটি ৫৬ লাখ টাকার আদান-প্রদানের লেনদেন হয়েছে বলে জানিয়েছে নিরীক্ষক। কিন্তু এ বিষয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) থেকে অনুমোদন নেওয়া হয়নি।

আমান কটন আইপিওতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে কাট-অফ প্রাইস ৪০ টাকা হিসেবে প্রতিটি শেয়ার ইস্যু করে। আর সাধারন বিনিয়োগকারীদের কাছে ৩৬ টাকা করে ইস্যু করে। বর্তমানে এই শেয়ারটির দর ১৮.০ে০ টাকায়।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া আমান কটনের পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ ১০০ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। এরমধ্যে শেয়ারবাজারের বিভিন্ন শ্রেণীর (উদ্যোক্তা/পরিচালক ব্যতিত) বিনিয়োগকারীদের মালিকানা ৫০.৪২ শতাংশ।

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে