ঢাকা, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩ পৌষ ১৪৩১

ভয়ে বিএসইসি চেয়ারম্যানের পদত্যাগ চাইতে পারছে না বাজার মধ্যস্থতাকারীরা

২০২৪ ডিসেম্বর ২৬ ০৯:২১:০৩
ভয়ে বিএসইসি চেয়ারম্যানের পদত্যাগ চাইতে পারছে না বাজার মধ্যস্থতাকারীরা

অর্থ বাণিজ্য প্রতিবেদক : আগের ন্যায় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন কমিশনও ভয়ের পরিবেশ তৈরী করেছে বাজার মধ্যস্থতাকারীদের মধ্যে। যে কারনে বর্তমান কমিশন অযোগ্য সত্ত্বেও তাদের পদত্যাগ বা অপসারনের দাবি করার সাহস করছে না বাজার মধ্যস্থতাকারীরা। কারন এরইমধ্যে বিএসইসির সমালোচনা করতে গিয়ে অনেকে ব্যক্তিগত আক্রোশের স্বীকার হয়েছেন।

শীর্ষ স্থানীয় এক ব্রোকার অর্থ বাণিজ্যকে বলেন, অর্থ উপদেষ্টা বিএসইসি চেয়ারম্যানের পূর্ব পরিচিত এবং তাদের মধ্যে সক্ষ্যতা আছে। নিজের দূর্বলতা ঢাকতে এই সুযোগকে কাজে লাগান বিএসইসি চেয়ারম্যান। তিনি সবসময় বাজার মধ্যস্থতাকারীদের নিয়ে অর্থ উপদেষ্টার কাছে বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ করেন এবং নিজের কর্মকাণ্ডের গুণগান করেন। এরমাধ্যমে অনেকটা বাজার মধ্যস্থতাকারীদেরকে ভিলেন বানানো হয়েছে উপদেষ্টার কাছে। যে কারনে উপদেষ্টা বাজার মধ্যস্থতাকারীদেরকে ভালো চোখে দেখেন না। আর বিএসইসি চেয়ারম্যান যোগ্য ও সঠিক দায়িত্ব পালন করছেন বলে মনে করেন উপদেষ্টা। তবে এভাবে বেশিদিন যাবে না। একদিন উপদেষ্টা ঠিকই বুঝবেন প্রকৃত সমস্যাটা কোথায়।

ওই ব্রোকার আরও বলেন, আওয়ামীলীগ মুক্ত বা নতুন স্বাধীন দেশেও বিএসইসিকে ভয়ে চলতে হয়। কারন এরইমধ্যে বিএসইসির কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করতে গিয়ে রোষাণলে পড়েছেন। এ কারনে কেউই এখন ভয়ে কথা বলতে চায় না। অথচ বিএসইসিতে দূর্ণীতিবাজ কর্মকর্তারা সবাই বহাল তবিয়তে রয়েছে।

খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন কমিশনের উপর শুরু থেকেই শেয়ারবাজারের সব খাতের মানুষের ক্ষোভ। সবার মধ্যেই এই কমিশনের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। আর প্রকাশ্যে তার বিরুদ্ধে বহুদিন বিনিয়োগকারীরা বিক্ষোভ-মানববন্ধন করেছেন। এই কমিশনের যোগ্যতা নেই বলে পদত্যাগ দাবি করা হয়েছে। এছাড়া বিএসইসির মূল ফটক তালা মেরে চেয়ারম্যান, কমিশনারসহ সব কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে অবরুদ্ধ করে রাখার মতো নজিরবিহীন ঘটনাও ঘটেছে।

তারপরেও চেয়ার আকঁড়ে ধরে রেখেছেন রাশেদ মাকসুদ। বিনিয়োগকারীসহ শেয়ারবাজারের সব ক্ষেত্রের মানুষ তাকে না চাইলেও তিনি যাবেন না। অথচ সামান্য সমালোচনা উঠতেই মাসরুর রিয়াজ বিএসইসিতে যোগদানই করেননি।

এতো কিছুর পরেও রাশেদ মাকসুদের চেয়ার আকঁড়ে ধরে রাখায় তার ক্ষতি না হলেও প্রতিদিন পুঁজি হারাচ্ছে বিনিয়োগকারীরা। ধংসের পথে বাজার মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠান। অথচ আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পরে ও মাকসুদের নেতৃত্বাধীন কমিশন পূণ:গঠনের আগে শেয়ারবাজারে অনেক ভালো হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিল। যা পরবর্তীতে বিএসইসিতে যোগ্য লোকের অভাবে সম্ভব হয়ে উঠেনি।

তারপরেও বাজার মধ্যস্থতাকারীরা রাশেদ মাকসুদের অপসারন চাওয়ার সাহস করতে পারছেন না। অনেকটা আওয়ামীলীগের সময়ের ভয়ের পরিবেশ এখনো তাদের মধ্যে তৈরী করা হয়েছে। কারন এরইমধ্যে প্রতিবাদ করতে গিয়ে কেউ কেউ ব্যক্তিগত আক্রোশের স্বীকার হয়েছেন।

জানা গেছে, ব্রোকারেজ হাউজের কেউ কেউ সরাসরি কথা বলতে পছন্দ করেন। যা বিএসইসির অনেক কর্মকর্তার ভালো লাগে না। এ কারনে ব্র্যাক ইপিএল, লংকাবাংলা ও ইউসিবি ব্রোকারেজ হাউজের তদন্ত করছে বিএসইসি।

অথচ এমনিতেই শেয়ারবাজারের কেউই ভালো নেই খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে। ধারাবাহিক পতনে বাজার মধ্যস্থতাকারীদের টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে। লোকসানের মধ্য দিয়ে চলতে চলতে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। এ নিয়ে বিএসইসির ভ্রুক্ষেপ নেই। উল্টো তাদের বিপদ বাড়ানোর জন্য করণীয় সব করে যাচ্ছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে