ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১ মাঘ ১৪৩১

ব্যবসায় হারিয়ে যাওয়া এ্যাপোলো ইস্পাতের অ্যাকাউন্টসের কিছুই ঠিক নেই

২০২৫ জানুয়ারি ১৩ ০৯:০৯:১৯
ব্যবসায় হারিয়ে যাওয়া এ্যাপোলো ইস্পাতের অ্যাকাউন্টসের কিছুই ঠিক নেই

অর্থ বাণিজ্য প্রতিবেদক : একসময়ের সাড়া জাগানো রাণী মার্কা ঢেউ টিন ব্র্যান্ডের এ্যাপোলো ইস্পাত শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের জন্য এক অভিশপ্ত কোম্পানি। কোম্পানিটির জন্য শেয়ারবাজার থেকে ২০১৩ সালে ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের সঙ্গে ১২ টাকা প্রিমিয়ামসহ মোট ১০ কোটি শেয়ার ছেড়ে থেকে ২২০ কোটি টাকা সংগ্রহ করে। এরপর থেকেই মূলত শুরু হয় কোম্পানিটির পতন। যে কোম্পানিটির এখন আর্থিক হিসাবের কোনকিছুই ঠিক পায় না নিরীক্ষক।

কোম্পানিটির সর্বশেষ ২০২২-২৩ অর্থবছরের আর্থিক হিসাব নিরীক্ষায় নিরীক্ষকের প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

ডিএসই সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে বাজার থেকে ২২০ কোটি টাকা সংগ্রহ করে কোম্পানিটি। তালিকাভুক্তির পর কোম্পানিটি প্রথম তিন বছর উচ্চ মুনাফা দেখিয়েছিল। কিন্তু ২০১৭ সালে প্রাক-আইপিও শেয়ারগুলো বাজারে বিক্রির যোগ্য হওয়ার পরে ব্যবসায় পতন শুরু হয়।

২০১৯ সাল থেকে কোম্পানির ব্যবসায়িক পারফরম্যান্স সম্পর্কে অন্ধকারে ছিলেন শেয়ারহোল্ডাররা। কারণ, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে কোম্পানিটি ৯২ কোটি টাকার নিট লোকসান প্রকাশের পরে তথ্য প্রকাশ বন্ধ হয়ে যায়।

নিরীক্ষক জানিয়েছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরের নিরীক্ষা কাজের জন্য ২০২৩ সালের ৩০ জুনের মধ্যে তাদেরকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। ফলে স্বশরীরে কোম্পানিটির ওই অর্থবছরের শেষদিন কি পরিমাণ মজুদ পণ্য ছিল, তা গণনা করা যায়নি। এমনকি বিকল্প কোন উপায়ে মজুদ পণ্যের বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারেননি নিরীক্ষক।

একইভাবে কোম্পানিটির গ্রাহকদের কাছে পাওনা টাকার পরিমাণ ও সহযোগিতে বিনিয়োগের ধরন নিয়ে নিশ্চিত হতে পারেননি নিরীক্ষক। যে কোম্পানিটিতে স্থায়ী সম্পদ নিয়ে সঠিক রেজিস্টার বুকস নেই বলে জানিয়েছেন নিরীক্ষক।

ধংস হয়ে যাওয়া এই কোম্পানিটির ঋণ ও ঋণজনিত সুদের ব্যয় বিষয়ে পর্যাপ্ত প্রমাণাদি দেখাতে পারেনি এ্যাপোলো ইস্পাত কর্তৃপক্ষ।

ফলে এসব হিসাবের ক্ষেত্রে কোন সমন্বয় দরকার আছে কিনা, তা নিরীক্ষক নিশ্চিত না।

একইভাবে ওইসব হিসাবের কারনে ‘প্রফিট অর লস’ হিসাব, ‘চেঞ্জেস ইন ইক্যুইটি’ হিসাব এবং ‘ক্যাশ ফ্লো’ হিসাবে পরিবর্তন আসতে পারে।

আরও পড়ুন......

বীচ হ্যাচারিতে অতিরঞ্জিত আয়

এই ঢেউটিন কোম্পানিটির আগের অর্থবছরগুলোতেও সঠিকভাবে অ্যাকাউন্টস করা হয় না। যে কারনে নিরীক্ষক কোম্পানিটির ২০২০-২১ অর্থবছরের ব্যালেন্স শীটে যে ভয়াবহ বা বড় ধরনের কোন গরমিল ছিল, তা নিয়ে সন্দেহ করেছেন।

এই কোম্পানি কর্তৃপক্ষ ওই অর্থবছরে পণ্য বিক্রি থেকে ৭৬ কোটি ৪৬ লাখ টাকা মূল ব্যবসার বাহিরে অন্যখাত থেকে (নন-অপারেটিং) ৩৫ কোটি ৬৯ লাখ টাকা আয় দেখিয়েছে। তবে এর স্বপক্ষে প্রমাণাদি দিতে পারেনি এ্যাপোলো ইস্পাত কর্তৃপক্ষ।

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া এ্যাপোলো ইস্পাতের পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ ৪০১ কোটি ৩১ লাখ টাকা। এরমধ্যে শেয়ারবাজারের বিভিন্ন শ্রেণীর (উদ্যোক্তা/পরিচালক ব্যতিত) বিনিয়োগকারীদের মালিকানা ৭৯.৭৬ শতাংশ। কোম্পানিটির রবিবার (১২ জানুয়ারি) শেয়ার দর দাঁড়িয়েছে ৩.৫০ টাকায়।

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে