ঢাকা, রবিবার, ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২০ মাঘ ১৪৩১

চার কোম্পানির তদন্ত প্রতিবেদন জমা : জড়িত বিএসইসির অনেক রাঘববোয়াল

২০২৫ ফেব্রুয়ারি ০২ ০৯:০৭:১২
চার কোম্পানির তদন্ত প্রতিবেদন জমা : জড়িত বিএসইসির অনেক রাঘববোয়াল

অর্থ বাণিজ্য প্রতিবেদক : বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) গঠিত তদন্ত কমিটি ৪টি কোম্পানির বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। এতে বিএসইসির আগের কমিশনের চেয়ারম্যানসহ ২ কমিশনার ও বিএসইসির বর্তমান অনেক উর্ধ্বতন কর্মকর্তার নাম উঠে এসেছে। এ কারনে রিপোর্ট সবার উদ্দেশ্যে প্রকাশ করছে না কমিশন। যদিও সংস্থাটির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ তদন্ত কমিটির রিপোর্ট সবার উদ্দেশ্যে প্রকাশ করবেন বলে জানিয়েছিলেন।

এরইমধ্যে তদন্ত কমিটি বেক্সিমকো গ্রীন-সুকুক আল ইসতিসনা, IFIC Guaranteed Sreepur Township Green Zero Coupon Bond, বেস্ট হোল্ডিংস ও কোয়েস্ট বিডিসি লিমিটেড (পূর্বে পদ্মা প্রিন্টার্স অ্যান্ড কালারস লিমিটেড) নিয়ে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছে।

তদন্ত রিপোর্টে কোম্পানি ৪টির অর্থ উত্তোলনের অনুমোদনকে কেন্দ্র করে ভয়াবহ অনিয়ম ও দূর্ণীতি হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। এতে বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম, সাবেক ২ কমিশনার এবং বিএসইসির ক্যাপিটাল রেইজিং বিভাগের কর্মকর্তাদের জড়িত থাকার বিষয় উঠে এসেছে। এছাড়া অন্যান্য বিভাগের কিছু নির্বাহি পরিচালকের দূর্ণীতির বিষয় উঠে এসেছে।

তদন্ত কমিটি বিএসইসির দূর্ণীতিতে জড়িত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দূর্ণীতি দমন কমিশনে (দুদক) অধিকতর তদন্তের জন্য পদক্ষেপ নিতে সুপারিশ করেছে। এছাড়া আইনগত পদক্ষেপ নিতে সুপারিশ করেছে। আর সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে সিকিউরিটিজ আইন অনুযায়ি ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছে।

কমিটি এই রিপোর্ট জমা দিয়েছেন বেশ কিছুদিন হয়ে গেছে। কিন্তু বিএসইসির অনেক কর্মকর্তার দূর্ণীতির তথ্য রিপোর্টে উঠে আসায়, বর্তমান কমিশন তা প্রকাশ করছে না। এরইমধ্যে বিএসইসির বর্তমান ৭জন কর্মকর্তার পাসপোর্ট বাতিল ও দুদকের তদন্ত করার কারনে চাঁপে রয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।

এ বিষয়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের এক পরিচালক অর্থ বাণিজ্যকে বলেন, তদন্ত রিপোর্ট নিয়ে লুকোচুরি করার কিছু নেই। যেহেতু এ কমিশন নিজেদেরকে স্বচ্ছ দাবি করে, সেহেতু তাদের উচিত রিপোর্ট সবার জন্য প্রকাশ করা। এছাড়া কমিশনের প্রধানতো আগেই ঘোষণা দিয়েছিলেন প্রকাশ করবেন।

এ বিষয়ে বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, এরকম কমিটি করার চাইতে না করাই ভালো। পাঁচ মাসের মধ্যেও যদি রিপোর্ট দিতে না পারে, তাহলে এমন কমিটির প্রয়োজনীয়তা দেখছি না।

গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের টেরা রিসোর্সেস ইন্টারন্যাশনালের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এবং কনসালটেন্ট ড. জিয়া ইউ আহমেদকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি করে বিএসইসি। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- ফিনান্সিয়াল সেক্টর স্পেশালিস্ট ইয়াওয়ার সাইদ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক সদস্য (পিআরএল) মো: শফিকুর রহমান, ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার মো: জিশান হায়দার ও বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মো: আনোয়ারুল ইসলাম।

কমিটিকে প্রাথমকিভাবে বেক্সিমকোর সুকুক বন্ডসহ ১২ কোম্পানির বিষয়ে তদন্ত করতে বলা হয়। এজন্য ৬০ দিন সময় দেওয়া হয়েছিল। যে সময়ে কমিটি পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট দিতে ব্যর্থ হয়। এরপরে কয়েক দফায় সময় বাড়ানো হলেও পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট জমা দিতে ব্যর্থ হয়েছে কমিটি।

তবে ওই সময়ের মধ্যে আংশিক রিপোর্ট জমা দিয়েছে কমিটি। এরমধ্যে ৪টি বিষয়ে রিপোর্ট জমা দিয়েছে। যা এখনো প্রকাশ করা হয়নি।

তবে তদন্ত কমিটি নিয়ে ২ সেপ্টেম্বর বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ বলেছিলেন, পুঁজিবাজারে আগের বিভিন্ন অনিয়ম, কারসাজি ও দুর্নীতি খুঁজে বের করতে নবগঠিত অনুসন্ধান ও তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে।

কমিটিকে প্রাথমিকভাবে বেক্সিমকো গ্রীন-সুকুক আল ইসতিসনা , IFIC Guaranteed Sreepur Township Green Zero Coupon Bond, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ পিএলসি (সিএসই) এর স্ট্যাটেজিক পার্টনার বা কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে বসুন্ধরা গ্রুপের প্রতিষ্ঠান এবিজি লিমিটেড, বেস্ট হোল্ডিংস, আল-আমিন কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ, সোনালী পেপার অ্যান্ড বোর্ড মিলস, ফরচুন সুজ, রিং শাইন টেক্সটাইল, একমি পেস্টিসাইডস, কোয়েস্ট বিডিসি লিমিটেড (পূর্বে পদ্মা প্রিন্টার্স অ্যান্ড কালারস লিমিটেড), কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ও এমারেল্ড ওয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ নিয়ে তদন্ত করতে বলা হয়েছে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সাবেক এক কর্মকর্তা অর্থ বাণিজ্যকে বলেন, কমিশন এই তদন্ত কমিটি করে বলেছিল প্রথম ধাপে ১২ টি কোম্পানির বিষয়ে তদন্ত শেষ করে সবার জন্য প্রকাশ এবং শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়ে দ্বিতীয় ধাপে আরও কোম্পানির বিরুদ্ধে তদন্ত করবে। যার কোনও নমুনা দেখা যাচ্ছে না।

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে