ঢাকা, মঙ্গলবার, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২২ মাঘ ১৪৩১

মাকসুদের জায়গা জেলখানায়, শেয়ারবাজারের অভিভাবকের না

২০২৫ ফেব্রুয়ারি ০৩ ২১:৫৭:৪০
মাকসুদের জায়গা জেলখানায়, শেয়ারবাজারের অভিভাবকের না

অর্থ বাণিজ্য প্রতিবেদক : গণঅভ্যুত্থানের রক্তে কোনো দেবর-ভাবির সম্পর্ক চলবে না এমন মন্তব্য করে আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বলতে চাই- যেই রাশেদ মাকসুদের (বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ) জায়গা হওয়ার কথা ছিলো জেলখানায়, ৩৩ লাখ মানুষের অভিভাবকত্ব এই ডাকাতের হাতে আপনার কিভাবে তুলে দিলেন? এটা গণমানুষের সিদ্ধান্ত হতে পারে না।

অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের পক্ষ থেকে বারবার যৌক্তিক যে দাবিগুলো করা হচ্ছে, আমরা দেখতে পারছি অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টাসহ অন্যান্য উপদেষ্টরা এগুলোকে ছেলেখেলার মোয়ার মতো করে নাচনিবুড়ির মতো করে খেলছেন। অর্থ উপদেষ্টাকে বলছি নাচানাচি বন্ধ করেন। আপনাদেরকে আমরা যেভাবে দয়াকরে চেয়ারে বসিয়েছি, আবার দয়াকরে চেয়ার থেকে নামিয়ে দিতে পারি।

বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট ইনভেস্টর অ্যাসোসিয়েশনের (বিসিএমআইএ) ব্যানারে সোমাবার (৩ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পুরোনো ভবনের সামনে আয়োজিত সমাবেশ তিনি এসব কথা বলেন।

ফুয়াদ বলেন, যখন পুঁজিবাজারের লাখ লাখ বিনিয়োগকারী ভাই-বোন খেতে না পেরে আত্মহত্যা করছে। দিনের পর দিন প্রতিবাদ করছে। মাসের পর মাস বিনিয়োগ ফিরে পাওয়ার জন্য, পলিসির জন্য আন্দোলন করছে, ঠিক সেই সময় আমরা দেখলাম অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একদল বাটপার, লুটেরাদেরকে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে এনে স্টক এক্সচেঞ্জে বসিয়ে প্রমান করেছে বাংলাদেশে যাদের আমরা জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে রক্ত দিয়ে দয়া করে উপদেষ্টা বানিয়েছিলাম, তারা ৩৩ লাখ পরিবারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে।

তিনি বরেন, এ জন্য গণঅভ্যুত্থান হয়নি, এ জন্য শেখ পরিবারকে দিল্লীতে পাঠানো হয়নি, এ জন্য আওয়ামী লীগকে আমরা গণভবনের জাদু ঘরে পাঠায়নি। এ জন্য নতুন নতুন উপদেষ্টা বানানো হয়নি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বলতে চাই- যেই রাশেদ মাকসুদের জায়গা হওয়ার কথা ছিলো জেলখানায়, ৩৩ লাখ মানুষের অভিভাবকত্ব এই ডাকাতের হাতে আপনার কিভাবে তুলে দিলেন? এটা গণমানুষের সিদ্ধান্ত হতে পারে না।

তিনি আরও বলেন, বিল্ডিংয়ের ভিতরে যেসব কমিশনাররা অবৈধভাবে লুটপাটের চেয়ারে বস মার্কেটে ডাকাতি করার চক্রান্ত করে যাচ্ছেন দিনের পর দিন এবং মাসের পর মাস, আপনারা অবিলম্বে পদত্যাগ করবেন। ভদ্রভাবে পদত্যাগ করবেন। ভদ্রবাবে দুদকের মামলায় আত্মসমার্পন করবেন। লুটপাটকারীদেরকে পুনবার্সন করার রাজনীতি বাংলাদেশে আর হতে দেয়া যাবে না।

এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক বলেন, পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের পক্ষ থেকে বারবার যৌক্তিক যে দাবিগুলো করা হচ্ছে, আমরা দেখতে পারছি অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টাসহ অন্যান্য উপদেষ্টরা এগুলোকে ছেলেখেলার মোয়ার মতো করে নাচনিবুড়ির মতো করে খেলছেন। অর্থ উপদেষ্টাকে বলছি নাচানাচি বন্ধ করেন। আপনাদেরকে আমরা যেভাবে দয়াকরে চেয়ারে বসিয়েছি, আবার দয়াকরে চেয়ার থেকে নামিয়ে দিতে পারি।

তিনি বলেন, আমরা পরিস্কার করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বলছি- অবিলম্বে একটা স্বাধীন তদন্ত কমিশন করবেন। চোর-ডাকাতদের আত্মীয়তার সম্পর্কের ভিত্তিতে না, চুরির ভিত্তিতে জেলে পাঠাতে হবে, ডাকাতির ভিত্তিতে জেলে পাঠাতে হবে। দুদকের মামলার ভিত্তিতে জেলে পাঠাতে হবে। শত শত হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাটের ভিত্তিতে এই রাশেদ মাকসুদকে জেলে পাঠাতে হবে।

তিনি আরও বলেন, শুধু রাশেদ মাকসুদ না, এর আগের যে চেয়ারম্যান পুঁজিবাজারকে লুটপাট করে শেষ করে দিয়ে গেছে, যার লুটপাটের প্রপাটি, সিঙ্গাপুরে টাকা পাচারের ঘটনা পৃথিবীর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে, তাকে এখনো পর্যন্ত গ্রেফতার করেননি। তিনি নাকি আপনাদের কোন কোন উপদেষ্টার শাশুড়ি লাগেন, বউ লাগেন, দেবরের জামাই লাগেন। গণঅভ্যুত্থানের রক্তে কোনো দেবর-ভাবির সম্পর্ক চলবে না। গণঅভ্যুত্থানের রক্তের একটাই সম্পর্ক সেটা হচ্ছে ন্যায্যতার সম্পর্ক। সেটা হচ্ছে ইনসাফের সম্পর্ক। সেটা হচ্ছে বৈষ্যমহীন পুঁজিবাজার গঠনের সম্পর্কে।

ফুয়াদ বলেন, এই কমিশনকে পদচ্যুত করে নতুন যে কমিশনের প্রস্তাব করবেন, সেই কমিশনের সদস্যদের ব্যাপারে পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের পরমর্শ নিতে হবে। তাদের আস্থা আছে কি না। স্টক এক্সচেঞ্জ, আইসিবি’র যাদের বিষয়ে বিনিয়োগকারীদের আস্থা নেই, তাদের আমরা এই সকল চেয়ারে দেখতে চায় না।

তিনি বলেন, আপনারা যদি সত্যিই পুঁজিবাজার টাস্কফোর্স করে থাকেন, এই টাস্কফোর্সে বাটপারদের নাম দেখতে পারছি কেন? যারা বিভিন্নভাবে ফোর্স সেল করছে। লুটপাট করে দাম বাড়ায় এবং কমায় সেই সকল ব্যক্তিদের দিয়ে সংস্কারের নাটক আমাদের দেখাবেন না। ওই সংস্কারের নাটক আমরা মানি না।

তিনি আরও বলেন, টাস্কফোর্স করা হয়েছে, ফোকাস গ্রুপ করা হয়েছে। আমরা ইতোমধ্যে দেখতে পরছি ফোকাস গ্রুপের সদস্যদের বিশ্বাসযোগ্যতা ও গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উপঠেছে। যাদের সততা নিয় প্রশ্ন রয়েছে, তাদের কোনোভাবেই আমরা ফোকাস গ্রুপে দেখতে চায় না। আমরা আস্থাবান সদস্য চায়।

গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের পর আমাদের সকলের সমর্থ নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে। আমাদের প্রত্যাশা ছিলো সেই সরকার জনগণের সরকার হবে। আমাদের দুঃখ্য, কষ্ট, দুর্দশা বুঝবে। গত ৫ মাসের যে অভিজ্ঞতা- সরকার জনগণের পালস বুঝতে পারছে না এবং জনগণের দুঃখ্য, দুর্দশা অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে পারছে না। তার একটা উদাহরণ শেয়ারবাজারের ভুক্তভোগি বিনিয়োগকারীরা এখানে দাঁড়িয়েছেন।

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে