ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ মার্চ ২০২৫, ২৭ ফাল্গুন ১৪৩১

বিএসইসিতে নজিরবিহীন ক্রোন্দল : শেয়ারবাজারে নেতিবাচক বার্তা

২০২৫ মার্চ ০৯ ০৯:২০:১১
বিএসইসিতে নজিরবিহীন ক্রোন্দল : শেয়ারবাজারে নেতিবাচক বার্তা

অর্থ বাণিজ্য প্রতিবেদক : শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) বুধবার চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের সঙ্গে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নজিরবিহীন ক্রোন্দলের ঘটনা ঘটেছে। যেখানে বিএসইসির সব কর্মকর্তা-কর্মচারীরা একজোট হয়ে বিএসইসির চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের পদত্যাগ চেয়েছেন। এ নিয়ে বিএসইসিতে শেষ পর্যন্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপর সেনাবাহিনীর লাঠিচার্জের মতো ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনা শেয়ারবাজারে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে।

বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, শেয়ারবাজার একটি সংবেদনশীল জায়গা। এরমধ্যে বিএসইসি প্রধান নিয়ন্ত্রক সংস্থা। সেই প্রতিষ্ঠানে যদি ক্রোন্দল হয়, সেটা শেয়ারবাজারের জন্য খুবই দুঃখজনক। গত দুই কার্যদিবসের ঘটনা শেয়ারবাজারের ইতিহাসে ন্যাক্কারজনক। এটা বাজারের খুবই নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। তবে অযোগ্য মাকসুদের নেতৃত্বাধীন কমিশনের বিরুদ্ধে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একবদ্ধ হওয়া যেমন আশার আলো তৈরী করেছে, একইভাবে দূর্ণীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিচার হওয়াকে দূরে ঠেলে দিয়েছে।

বুধ ও বৃহস্পতিবারের ঘটনায় বিএসইসির চেয়ারম্যান-কমিশনারদের পদত্যাগ করা উচিত বলে মনে করেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। কারন এরইমধ্যে সব কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাদের বিরুদ্ধে চলে গেছে। ফলে তারা সেখানে কাজ করতে পারবে না। এছাড়া অযোগ্য হিসেবে তাদেরও থাকার অধিকার নেই। তাই যত দ্রুত সম্ভব তাদের পদত্যাগ অথবা সরকারের উচিত হবে বরখাস্ত করা। একইসঙ্গে তাদের জায়গায় যোগ লোকজনকে চেয়ারম্যান-কমিশনার হিসেবে নিয়োগ দিতে হবে।

বুধবার বিএসইসির নির্বাহি পরিচালক সাইফুর রহমানকে বিতর্কিতভাবে বাধ্যতামূলক অবসরের পাঠানো প্রতিবাদে কর্মকর্তারা পুরো কমিশনের পদত্যাগ দাবি করেন। এরই ধারাবাহিকতায় বিএসইসির প্রবেশ পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়। কমিশনের বোর্ড রুমে চেয়ারম্যান-কমিশনারদের কাছে ৪ দাবি তুলে ধরা হয়। তবে কমিশন তা মানতে অস্বীকার জানায়। এরপরে শুরু হয় চেয়ারম্যান-কমিশনারদের সঙ্গে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বাকবিতন্ডা।

এরই ধারাবাহিকতায় কমিশনের পক্ষ থেকে পুলিশকে ডাকা হয়। তবে পুলিশ আসলেও প্রবেশ করতে পারেনি। পরে দুপুর ২টায় ছয় গাড়ি সেনাবাহিনী আসে। তাদেরকেও ঠুকতে বাধা দেওয়া হয়। পরে সেনাবাহিনীর সদস‍্যরা জোর করে ঠুকে। এছাড়া বিদ‍্যুত সংযোগ চালু করেন।

চেয়ারম্যান ও কমিশনাররা জিম্মি এবং তাদের জীবন বিপন্ন, এ মিথ‍্যা কথা বলে সেনাবাহিনীকে ডাকা হয়। যারা এসে কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপর লাঠিচার্জ করেন। এতে করে বিএসইসির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন।

এরপর বিএসইসিতে শুরু হয় মাকসুদ কমিশনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান। এরমধ‍্যে অন‍্যতম- 'মাকসুদের দুই গালে জুতা মারো তালেতালে', 'মাকসুদ তুই কবে যাবি', 'অযোগ্য চেয়ারম্যানের পদত্যাগ পদত‍্যাগ' '১ ২ ৩ ৪ মাকসুদ তুই গদি ছাড়' ইত‍্যাদি।

পরে পদত‍্যাগ ছাড়াই সেনাবাহিনীর পাহারায় বিএসইসি ত‍্যাগ করেন চেয়ারম্যান ও কমিশনাররা।

এরপরে বৃহস্পতিবার আবারও সংবাদ সম্মেলন করে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মাকসুদের নেতৃত্বাধীন কমিশনের পদত্যাগ চান। একইসঙ্গে তারা কর্মবিরতি পালন করে।

ওইদিন আবারও নিরাপত্তা পাহারায় বিএসইসিতে ৩টায় প্রবেশ করেন বিএসইসির চেয়ারম্যান-কমিশনাররা। তারা সব লজ্জাকে বিসর্জন দিয়ে দায়িত্ব চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন সাংবাদিকদের কাছে। একইদিন বিকালে বিএসইসির ১৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকসুদ পেছনে থেকে মামলা করে চলমান সমস্যাকে আরেক ধাপ বাড়িয়ে দিয়েছেন।

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে