ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬ মাঘ ১৪৩১

বিশ্বসেরা কোয়ান্টাম প্রযুক্তির জিপিএইচ ইস্পাতের পতন

২০২৩ নভেম্বর ০৯ ০৭:৫৮:৪৯
বিশ্বসেরা কোয়ান্টাম প্রযুক্তির জিপিএইচ ইস্পাতের পতন

দৃঢ়তার প্রতিশ্রুতি নিয়ে জিপিএইচ ইস্পাত নিয়ে এসেছে ইতিহাসের সর্বাধুনিক কোয়ান্টাম টেকনোলজি। জিপিএইচ কোয়ান্টাম প্রযুক্তিতে কন্টিনিউয়াস কাস্টিং মেশিন থেকে শতভাগ পরিশোধিত বিলেট উৎপাদন করা হয়। যার প্রতিটি স্টিল রিবারে ইউনিফর্ম মার্টেনসাইট রিং গঠন নিশ্চিত করে। যার ফলে রিবারের ইউনিফর্ম স্ট্রেংথ, সুপিরিয়র ডাক্টিলিটি ও হায়েস্ট বেন্ডিবিলিটি অক্ষুন্ন থাকে। জিপিএইচ ইস্পাতই নির্মাণ করে বিশ্বসেরা পিউর এন্ড ক্লিন কোয়ান্টাম কনস্ট্রাকশন স্টিল। টেলিভিশনে চোখ রাখলেই জিপিএইচের এমন প্রচার-প্রচারণা চোখে পড়বে।

অথচ এমন একটি বিশ্বমানের পণ্য তৈরী করা জিপিএইচ ইস্পাতের ২০২২-২৩ অর্থবছরে মুনাফা ও লভ্যাংশে ধস নেমেছে। এ কোম্পানিটির আগের অর্থবছরে শেয়ারপ্রতি ৩.৪২ টাকা করে নিট মুনাফা হয়েছিল ১৪৯ কোটি ৪৩ লাখ টাকার। যা ২০২২-২৩ অর্থবছরে শেয়ারপ্রতি ০.৫৮ টাকা করে ২৬ কোটি ৭৩ লাখ টাকায় নেমে এসেছে। মুনাফার পতনে লভ্যাংশেও অবনমন হয়েছে বিশ্ব প্রযুক্তির জিপিএইচ ইস্পাতের। আগের বছর ১১% (৫.৫০% নগদ ও ৫.৫০% বোনাস) লভ্যাংশ দেওয়া কোম্পানিটির পর্ষদ এ বছর ১০% (৫% নগদ ও ৫.৫০% বোনাস) লভ্যাংশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নগদ লভ্যাংশ শুধুমাত্র সাধারন শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ঘোষনা করা হয়েছে।

মুনাফার পতনের কারন হিসেবে জিপিএইচ ইস্পাত কর্তৃপক্ষ ডিএসইকে জানিয়েছে, বৈদেশি মুদ্রা বিনিময় লোকসান হয়েছে। এছাড়া আমদানিকৃত কাচাঁমালের দাম বৃদ্ধিকে কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

এই কোম্পানিটির পর্ষদ ২০২২-২৩ অর্থবছরের ২৬ কোটি ২৩ লাখ টাকার অর্জিত মুনাফার মধ্য থেকে ১১ কোটি ৬১ লাখ টাকা শেয়ারহোল্ডারদের দেবে। বাকি ১৪ কোটি ৬২ লাখ টাকা বা ৫৬ শতাংশই কোম্পানিতে রেখে দেওয়া হবে।

জিপিএইচ ইস্পাত ২০০৮ সালে ব্যবসায় শুরু করে। এরপরে ৪ বছরের মাথায় ২০১২ সালে শেয়ারবাজারে আসে। ওইসময়ে কোম্পানিটি প্রতিটি শেয়ার ৩০ টাকা (প্রিমিয়াম ২০ টাকা) দরে ইস্যুর মাধ্যমে ৬০ কোটি টাকা সংগ্রহ করে। এর ৪ বছর পরে (২০১৬ সাল) এসে ১৪ টাকা দরে ১৮ কোটি ৭১ লাখ ১০ হাজার রাইট শেয়ার ইস্যু করে। এর মাধ্যমে কোম্পানিটি শেয়ারবাজার থেকে ২৬১ কোটি ৯৫ লাখ ৪০ হাজার টাকা সংগ্রহ করে। কিন্তু তারপরেও কোম্পানিটির পর্ষদ বোনাস শেয়ার থেকে বেরোতে পারেনি।

আরও পড়ুন……১১২ টাকা ইস্যু মূল্যের ক্রাউন সিমেন্টের ২ টাকা লভ্যাংশ ঘোষণা

২০১৬ সালে রাইট শেয়ার ইস্যুর পরে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের ব্যবসায় কোম্পানিটির পর্ষদ ৫ শতাংশ নগদ ও ৫ শতাংশ বোনাস শেয়ার ঘোষণা করে। যা ২০১৭-১৮ অর্থবছরে শুধুমাত্র ১০ শতাংশ বোনাস শেয়ার দেয়। এরপরে ২০১৮-১৯ ও ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৫ শতাংশ নগদ ও ৫ শতাংশ বোনাস শেয়ার করে লভ্যাংশ দেয়। এরপরের বছর (২০২০-২১) ২০ শতাংশ নগদের পাশাপাশি ১০ শতাংশ বোনাস ও ২০২১-২২ অর্থবছরের ব্যবসায় ৫.৫০ শতাংশ নগদ ও ৫.৫০ শতাংশ বোনাস শেয়ার দেয়। আর সর্বশেষ ২০২২-২৩ অর্থবছরের ব্যবসায় ৫% নগদের (শুধুমাত্র সাধারন শেয়ারহোল্ডার) পাশাপাশি ৫% বোনাস শেয়ার ঘোষণা করা হয়েছে। অর্থাৎ রাইট শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে কোম্পানিটি বড় অর্থ সংগ্রহের পরেও নিয়মিত বোনাস শেয়ার দিয়ে যাচ্ছে।

নিয়মিত বোনাস শেয়ার প্রদান ও ২০১৬ সালে রাইট ইস্যুর মাধ্যমে কোম্পানিটির বর্তমানে পরিশোধিত মূলধন দাঁড়িয়েছে ৪৬০ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। যার পরিমাণ আইপিও পূর্ব ছিল মাত্র ৫০ কোটি টাকা। অর্থাৎ তালিকাভুক্তির পরে কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন বাড়ানো হয়েছে ৪১০ কোটি ৮৪ লাখ টাকা বা ৮৮২ শতাংশ। এছাড়া ২০২২-২৩ অর্থবছরের ব্যবসায় আরও ২৩ কোটি ৪ লাখ টাকার পরিশোধিত মূলধন বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

২০১২ সালে জিপিএইচ শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির পরে কোম্পানিটির পর্ষদ ১২ বার লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এরমধ্যে ৪ বার শুধুমাত্র বোনাস শেয়ার ঘোষণা করেছে। আর ৬ বার বোনাস শেয়ারের পাশাপাশি নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। আর ২ বার শুধুমাত্র নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে।

উল্লেখ্য বুধবার (০৮ নভেম্বর) লেনদেন শেষে জিপিএইচ ইস্পাতের শেয়ার দর দাঁড়িয়েছে ৪৪.৮০ টাকায়। এই দরেও শেয়ারটিতে কোন ক্রেতা নেই। তবে ফ্লোর প্রাইসের (কৃত্রিমভাবে বেঁধে রাখা দর) কারনে ৪৪.৮০ টাকায় আটকে আছে। অন্যথায় শেয়ারটির দর পতন হতো।

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে